Ads (728x90)

পৃথিবীর মানচিত্রের দিকে তাকালে বাংলাদেশকে চোখেই পড়েনা। কারণ বাংলাদেশ পৃথিবীর ছোট দেশগুলোর একটি। তবে কোন দেশের আয়তন যদি হয় বাংলাদেশের এক হাজার ভাগের একভাগ বা তারও কম, তাকে কি বলা যায়? এমনও দেশ আছে যার আয়তন এক বর্গকিলোমিটারেও কম। তবু ক্ষুদ্র আয়তনের দেশগুলোরও আছে নিজস্ব স্বকীয়তা, সংস্কৃতি। আসুন জেনে নেই বিশ্বের দশটি ক্ষুদ্রতম দেশের কিছু তথ্য। 
অবস্থান : ইট্যালি 
এলাকা : ০.৪৪ বর্গ কিলোমিটার 
বিশ্বের ক্ষুদ্রতম দেশ ভ্যাটিকান । এতটাই ক্ষুদ্র যে তাকে দেশ না বলে বলা হয় সিটি বা ভ্যাটিকান সিটি। হোলি সিটি । ইট্যালির রাজধানী রোম শহরের মধ্যে মধ্যে ঢুকে পড়েছে দেশটি। দেশ হিসেবে যতই ছোটো হোক বিশ্বের সবচেয়ে বড় গির্জা সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকা কিন্তু ভ্যাটিকান সিটিতেই রয়েছে । আর বিখ্যাত ইট্যালিয়ান চিত্রকর মাইকেল্যাঞ্জেলোর “পিয়েতা” ও “দ্য ক্রিয়েশন অফ অ্যাডাম” রাখা আছে সেই গির্জাতেই।

২ : মোনাকো
অবস্থান:ইউরোপ,ফ্রান্স 
আয়তনঃ ২ বর্গ কিঃমিঃ 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সমান দেশটির নাম মোনাকো । ফ্রেঞ্চ রিভিয়েরায় অবস্থিত মোনাকো বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ । দেশটি জুয়ারিদের ভোগ বিলাসের জন্য বিখ্যাত। দেশের চারপাশে ফ্রান্স । একপাশে ভূমধ্যসাগর । বেশির ভাগ মানুষই ফরাসিভাষী । দুই বর্গ কিলোমিটারের দেশটিতে বাস করে ৩৬,০০০ মানুষ । সমস্ত ক্ষুদ্রতাকে কাটিয়ে ঘনত্বের বিচারে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ মোনাকো । ফর্মুলা ওয়ান রেসের জন্যে বিখ্যাত । দেশের বুকের উপর দিয়ে চলে গেছে ফর্মুলা ওয়ানের ট্র্যাক। 
৩ : নাউরু 
অবস্থান : অস্ট্রেলিয়া 
এলাকা : ২১ বর্গ কিলোমিটার 
অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের আরও একটি দেশ বিশ্বের ১০টি ছোটো দেশের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। এর নাম নাউরু ২১ বর্গ কিলোমিটারের এই দেশটি আয়তনে ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার কাছাকাছি। বাকি ১০ শতাংশ কাজ করে সরকারি দফতরে । বাকিদের কাজ নেই বললেই চলে। আবহাওয়াগত কারণে দেশটির ৯৫ শতাংশ মানুষ অতিরিক্ত ওজনের শিকার। 
৪ : টুভালু 
অবস্থান : অস্ট্রেলিয়া 
এলাকা : ২৬ কিলোমিটার 
রাজধানীর মিরপুর এলাকার চেয়েও আয়তনে ছোট দেশটির নাম টুভালু । মাত্র ২৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে বাস করে ১০ হাজার মানুষ। ৮ কিলোমিটারের রাস্তা । ১টি মাত্র হাসপাতাল । ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশদের কলোনি ছিল এই টুভালু।
৫ : সান ম্যারিনো 
অবস্থান : ইউরোপ, ইটালি 
এলাকা : ৬১ বর্গ কিলোমিটার 
দেশের চারপাশে ইট্যালি । শান্তপ্রিয় দেশ সান ম্যারিনো বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো সর্বভৌম দেশ। বাংলাদেশের চেয়ে প্রায় ২৪০০ গুন ছোট দেশটি ইউরোপের তৃতীয় ক্ষুদ্র। ৩০ হাজার বাসিন্দার এই দেশটিতে বেকারত্ব নেই বললেই চলে।
৬: লিচেনস্টাইন 
অবস্থান : ইউরোপ 
এলাকা : ১৬০ বর্গ কিলোমিটার 
ইউরোপের এই দেশটি বাংলাদেশের ৯০০ ভাগের একভাগ। সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়ার মাঝখানের লিচেনস্টাইন আল্পস পর্বতমালার কোলে শান্তিতে শুয়ে আছে । মাথাপিছু আয়ের হিসাবে লিচেনস্টাইন হল বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ । এখনও রাজবংশই শাসন করে লিচেনস্টাইনকে । 
৭ : সেইন্ট কিটস্ ও নেভিস 
অবস্থান :ক্যারিবিয়ান আইল্যান্ড 
এলাকা : ২৬১ বর্গ কিলোমিটার 
ক্যারিবিয়ান দ্বীপের আরও দুটি দ্বীপ সেইন্ট কিটস্ ও নেভিস বিশ্বের ১০টি ছোটো দেশের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে । ২৬১ বর্গ কিলোমিটারের দ্বীপ দুটিতে বিট্রিশ সভ্যতার ছাপ স্পষ্ট । সেখান বাগানওয়ালা রিসোর্ট আর সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্যও মুগ্ধ করে সবাইকে।

৮ : মালদ্বীপ 
অবস্থান : ভারত মহাসাগর 
এলাকা : ৩০০ বর্গ কিলোমিটার 

ভারত মহাসাগরে অবস্থিত মালদ্বীপ এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে ছোটো দেশ । দেশটিতে রয়েছে ১,১৯২টি প্রবালদ্বীপ । সে সব দ্বীপ কিন্তু এক জায়গায় নেই । ৯০,০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা বিস্তার করে ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে । প্রবাল দ্বীপগুলির এমন বিক্ষিপ্ত অবস্থানের কারণে মালদ্বীপকে বিশ্বের অন্যতম দ্বীপরাষ্ট্র হিসেবে এর বৈচিত্রই দেশটিকে আলাদা করে তুলেছে । বিভিন্ন সময় মালদ্বীপে আস্তানা গেড়েছিল পর্তুগিজ,ডাচ ও বিট্রিশরা । ১৯৬৫ সালে স্বাধীন হয়েছে মালদ্বীপ । প্রতিবছর সেখানকার সাদা বালির সমুদ্র সৈকতের টানে ভিড় জমান লাখো ভ্রমণপিপাসু । 
আপনি আরো পছন্দ করতে পারেনঃ


৯: মালটা 
অবস্থান : ভূমধ্যসাগর 
এলাকা : ৩১৬ বর্গ কিলোমিটার

ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপের অতি ক্ষুদ্র দেশ মালটা । প্রধানত তিনটি দ্বীপকে এক সঙ্গে করে তৈরি হয়েছে রিপাবলিক অফ মালটা। ক্ষুদ্র দেশ হলেও মালটার জনসংখ্যা কিন্তু সাড়ে চার লাখ । যার ফলে ঘনত্বের বিচারে মালটা হয়ে ওঠেছে বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশ । শুধু তাই নয়, পর্যটকদেরও আকর্ষণ করে সেখানকার ঝলমলে আবহাওয়া । হাতছানি দেয় ৭০০ বছরের পুরোনো ইতিহাস ।

১০ : গ্রেনাডা 
অবস্থান : ক্যারিবিয়ান আইল্যান্ড 
এলাকা : ৩৪৪ বর্গ কিলোমিটার 
উসেইন বোল্ট, ক্রিস গেইলদের জন্মভূমি ক্যারিবিয়ান দ্বীপেই রয়েছে ছোট্ট দেশ গ্রেনাডা । বাংলাদেশের ৫০০ ভাগের একভাগ এই ছোট্ট দ্বীপটিতে যে পরিমাণ জায়ফল ও জয়ত্রির চাষ হয়, তা আর কোথাও হয় না । ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর উত্তরপূর্ব কোণে অবস্থিত গ্রেনাডায় ফরাসি সংস্কৃতির গভীর প্রভাব রয়েছে । ১৬৪৯ সাল থেকে ১৭৬৩ সাল পর্যন্ত ফরাসিদের অধীন ছিল এই দেশ । দেশের ৩৪৪ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়ে আছে ফরাসি সভ্যতার নানা নিদর্শন। লোকজনের মধ্যে রয়েছে ফরাসি ফরাসি হাবভাব ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন