মিনায় হজে সময় পদদলিত হয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭৬৯ জন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সৌদি আরবের স্বাস্থ্যমন্ত্রী খালিদ আল ফালিহ। দুর্ঘটনার কারণে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ভাতৃত্বের বোধ যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ। এদিকে হজে পদদলিত হয়ে হাজিদের মৃত্যুর ঘটনায় মুসলিম বিশ্বের চাপের মুখে রয়েছে সৌদি প্রশাসন।
সৌদি আরবে হজ পালনের সময় পদদলিত হয়ে বিপুল সংখ্যক হাজি নিহতের ঘটনার পর শুক্রবার হজে অংশ নেয়া দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সৌদি বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ। এসময় বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের বাদশাহ জানান, হজের পুরো নিরাপত্তা পরিকল্পনা পর্যালোচনার নির্দেশ এরইমধ্যে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর ইসলামী ও আরব ঐক্যের বিষয়ে তার উদ্বেগের কথাও জানান সৌদি বাদশা।
সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ বলেন, 'আমরা হজ অনুষ্ঠানের বিষয়টিকে একটি আন্তর্জাতিক কার্যক্রম হিসেবেই দেখি। আমরা এই পুরো ঘটনাটির তদন্ত ও আমাদের হজ পরিকল্পনা পর্যালোচনার চেষ্টা করছি। আমাদের মুসলিম ভাইরা, আশা করি এই দুর্ঘটনার জের ধরে বিশ্বের মুসলিম ভাতৃত্বে কোন ফাটল ধরবে না।'
হজে পদদলিত হয়ে হাজিদের মৃত্যুর ঘটনায় মুসলিম বিশ্বের চাপের মুখ রয়েছে সৌদি প্রশাসন। নাইজেরিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়, দুর্ঘটনায় হাজিদের নিয়ম না মানার অভিযোগ সত্যি নয়। এমন ভয়াবহ একটি দুর্ঘটনা নিয়ে বাদশাহর মন্তব্যকে দায়িত্বহীন বলে বর্ণনা করে দেশটি। একই মন্তব্য এসেছে আরেক মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়ার পক্ষ থেকেও।
এর আগে, মিনায় হাজিদের মৃত্যুর জন্য সৌদি কর্তৃপক্ষের চরম অব্যবস্থাপনাই দায়ী বলে মন্তব্য করেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।
তিনি বলেন, 'সৌদি সরকার এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার দায় এড়াতে চাইছে। হজের বিশাল জনসমুদ্রকে সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছে তারা।এতগুলো মানুষের মৃত্যুর দায়ভার তাদের ওপরই বর্তায়।'
হজ পালনের সময় পদদলিত হয়ে হাজিদের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে ইরানের রাজধানী তেহরানে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে হাজার হাজার মানুষ। ওই দুর্ঘটনায় দেশটির সর্বোচ্চ ১৩১ জন হাজি নিহত হন বলেও দাবি তাদের। বিক্ষোভকারীদের দাবি সৌদি সরকার এতো বড় দুর্ঘটনার দায় এড়িয়ে যেতে পারে না।
আন্তর্জাতিক এই চাপের মধ্যে সৌদি আরবের পাশে দাঁড়িয়েছে উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলো। হজ পরবর্তী কার্যক্রমগুলো যাতে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা যায় সেজন্য উপসাগরীয় মুসলিম দেশগুলো সৌদি প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহায়তা দেবে বলে জানিয়েছেন, আবুধাবির যুবরাজ শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান।
এনিয়ে সৌদি বাদশাহর সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন তিনি। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান বলেছেন, সৌদি সরকার প্রতি বছরের মত এবারও শুরু থেকেই সার্বিকভাবে হজের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে আসছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন