ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের
চেয়ে কি ঢাকা মেডিকেলের লাইনম্যান আব্দুল জলিল বেশি ক্ষমতাধর ব্যক্তি? ঢাকা
মেডিকেলের চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সবার মুখেই এই একটি
কথা প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। কারণ নগর যানজটমুক্ত করতে মেয়রের নির্দেশকে থোরাই
কেয়ার করছেন তিনি!
গত ১৯ মে ঢাকা দক্ষিণে বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করা হয়। ওই মাইকিংয়ে সাঈদ
খোকন নির্দেশ দেন যে, ২০ মে থেকে ফুটপাতের উপর কোনো দোকানপাট থাকবে না। তার
এই নির্দেশের পর ২০ মে কয়েক ঘণ্টার জন্য দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু
ওইদিন দুপুরের পর আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে আবারও ঢাকা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালের সামনে অবৈধ দোকানপাট বসানো হয়।
গত কয়েক দিন সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কবির মাহমুদের
নেতৃত্বে হাসপাতালের সামনে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছিল এবং কয়েকজন
দোকানদারকে দুই হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়। কিন্তু তার কয়েক ঘণ্টা পর
আবারও দোকানপাট খুলে বসেন তারা।
অভিযোগ রয়েছে, আব্দুল জলিল ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে প্রতি দোকান থেকে
প্রতিদিন ৫০ থেকে ২শ টাকা করে চাঁদা নিচ্ছেন। অথচ তিনি ছাত্রলীগের কেউ নন।
এমনকি তার কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতাও নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসক
বাংলামেইলকে বলেন, ‘হাসপাতালের সামনে ফুটপাতে অবৈধভাবে ২শ দোকানপাট বসানো
হয়েছে। আর এ কারণে রোগীদের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। এমনকি অবৈধ এসব দোকানপাটের
কারণে বৈধ দোকানগুলো ব্যবসা করতে পারছে না।’
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না পুলিশ প্রশাসন কী করছে? এই
আব্দুল জলিল কি মেয়রের চেয়ে ক্ষমতাধর? যে কারণে পুলিশও তার কিছু করতে পারছে
না!’
মেয়র নির্দেশ অমান্য করে দোকান বসিয়ে চাঁদা নেয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে
আব্দুল জলিল বাংলামেইলকে বলেন, ‘পুলিশ না বললে আমরা কখনো এখান থেকে দোকান
সরাবো না। কারণ আমরা পুলিশকে সব সময় টাকা দেই।’
উল্লেখ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র সাঈদ খোকন নির্বাচিত
হওয়ার পর নগরবাসীর চলাফেরা নির্বিঘ্ন করতে গত ১৯ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটির
বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করা হয়। যেখানে বলা হয়, ২০ মে’র পর ফুটপাতে কোনো
দোকানপাট বসানো যাবে না।
এর আগে বেশ কয়েকবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. নাসিম সরকারি হাসপাতালগুলোর
সামনে অবৈধ দোকানপাট বসানোর ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন। কিন্তু এরপরও
সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী
ম্যাজিস্ট্রেট কবির মাহমুদ বাংলামেইলকে বলেন, ‘আমরা অল্প কয়েক দিন আগেই
সেখানে অভিযান চালিয়ে এসেছি। বেশ কয়েকজনের জরিমানাও করেছি। আগামী দু’এক
দিনের মধ্যেই আবার অভিযান হবে। এটা অব্যাহত থাকবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন