Ads (728x90)

একটি নয়, নারী পুলিশের নামে একাধিক ভুয়া ফেসবুক আইডির সন্ধান পেয়েছে প্রিয়.কম। আর এইসব ফেসবুক পেজে নারী পুলিশ সদস্যদের হেয় করা ছাড়াও সাধারণ নারীদের হয়রানি করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, এসব ফেসবুক আইডি বন্ধের ব্যাপারে তারা কাজ করছে। শনিবার প্রিয়.কম এ নারী পুলিশ সদস্যদের ভুয়া ফেসবুক পেজের সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর পুলিশ এখন নড়েচড়ে বসেছে।

ওই ভুয়া পেজগুলোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একই নারীদের ছবি পোস্ট করা আছে। এই ছবিগুলো অনুমতি না নিয়েই পোস্ট করা হয়েছে বলে প্রিয়.কমকে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট এক নারী। আর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপির পক্ষ থেকে আবারও বলা হয়েছে ‘বাংলাদেশ মহিলা পুলিশ’ নামে অফিসিয়ালি কোন ফেসবুক পেজ খোলা হয়নি। যদিও এই পেজগুলোর মধ্যে কেউ কেউ দাবি করছে তারা অফিসিয়াল।
এ অবস্থায় পুলিশকেও নানা হয়রানির শিকার ও প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নীলা (ছদ্মনাম)। ‘বাংলাদেশ মহিলা পুলিশ’ এর ফেসবুক পেজে তার ছবি পোস্ট করা আছে, যদিও তিনি কোনো পুলিশ সদস্য নন। শনিবার ‘নারী পুলিশের নামে ফেসবুক পেজ: কারা চালাচ্ছে, কেন চালাচ্ছে?’ এই শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ দেখে তিনি রোববার টেলিফোন করেন প্রিয়’র কার্যালয়ে। যে পেজটির কথা উল্লেখ করে রোববার সংবাদ প্রকাশিত হয়, সেটিতে তারও ছবি আছে বলে জানান তিনি। ফেসবুকে ‘বাংলাদেশ মহিলা পুলিশ’ এর পেজটিতে তাঁর ছবি দেখার পর রোববার তিনি প্রিয়.কম-কে জানান, এ ছবিটি তাঁর নিজস্ব ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া হয়েছে। আর কে ওই পেজটিতে ছবিটি পোস্ট করেছে সে ব্যাপারেও কিছুই জানা নেই তাঁর।
নীলা বলেন, ‘ছবিটির নিচে বেশ কিছু আপত্তিকর মন্তব্য রয়েছে। এ কারণে সামাজিকভাবে আমি হেয় হচ্ছি। ফেসবুকে আর কোনো ছবি পোস্ট করার ব্যাপারেও আমি ভীত হয়ে পড়েছি।আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে এখন যদি তাদের কেউ আমার ছবির নিচে এ ধরনের মন্তব্য দেখে তাহলে আমার সামাজিক সম্মান নষ্ট হয়ে যাবে।’ কথা বলার সময় একপর্যায়ে কেঁদে ফেলেন তিনি।
ফেসবুকে একই নামের আরও কিছু পেজ পাওয়া যায়। পেজগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, সবগুলো পেজেই প্রায় একই নারীদের ছবি পোস্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি পেজে ২০ হাজার ও একটিকে ১৩ হাজার লাইক ছাড়িয়ে গেছে। পেজগুলোতে একই নিয়মে ছবি পোস্ট করা হয়েছে। বেশিরভাগই কোনো নারী পুলিশের একক ছবি এবং ছবিটি পোস্ট করে জিজ্ঞেস করা হয়েছে ‘আমাকে কেমন লাগছে?’
এ ব্যাপারে ডিএমপি’র মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের উপ-কমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম প্রিয়.কম-কে বলেন, ‘অফিসিয়ালি এ ধরনের কোন পেজ খোলা হয়নি। নিয়ম মেনে পেজগুলো বন্ধ করতে একটু সময় লাগবে।’
যারা এ ধরনের কাজ করছে তাদের খুঁজে বের করার ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিয়েছেন কী না জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন্স নেটওয়ার্কের (বিপিডব্লিউএন) সাধারণ সম্পাদক ও ডিএমপির ফাইন্যান্স শাখার সহকারি উপ-কমিশনার আবিদা ইয়াসমিন প্রিয়.কম-কে বলেন, ‘আমরা নিজেরা চেষ্টা করেছি, কিন্তু পারিনি। আর তাছাড়া ফেসবুকের ওপর যেহেতু আমাদের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই তাই এটি খুবই কঠিন। তবে ডিবি’র সাথে কথা বলে এবং বিটিআরসি’র সহায়তা নিয়ে কীভাবে এই পেজগুলো বন্ধ করা যায় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
আবিদা ইয়াসমিন আরো জানান, ধারণা করা হচ্ছে ছবিগুলো প্রত্যেকের নিজস্ব ফেসবুক পেজ থেকে অনুমতি না নিয়ে পোস্ট করা হচ্ছে। তবে কে এই কাজগুলো করছে তা জানা যায়নি। এমনও হতে পারে কোনো পুলিশ সদস্য না বুঝেই এই কাজ করছে। বিষয়টি এত গুরুতর হয়ে উঠবে হয়তো সে বুঝেই উঠতে পারেনি।
অনুসন্ধানেঃ প্রিয় ডট কম 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন