সৌদি আরবের মক্কায় মসজিদুল হারামে ক্রেন ছিঁড়ে পড়ার ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। মুসলমানদের পবিত্র এই স্থানের নিরাপত্তা নিয়ে সমালোচনার মুখে এ উদ্যোগ নিলো সৌদি সরকার।
এর আগে শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে এ দুর্ঘটনায় নিহত হন অন্তত ১০৭ জন হাজি। আহত হয়েছেন ২শ' ৩০ জন। আহতদের মধ্যে ৪০ জন বাংলাদেশি রয়েছেন। মক্কায় প্রচণ্ড ঝড়ের কারণেই ক্রেনটি ছিঁড়ে পড়ে বলে জানায় সৌদির সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি।
শুক্রবার মাগরিবের নামাজের আগমুহূর্তে হারাম শরীফের ভেতরে হঠাৎ করেই ক্রেনটি ধসে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যেই সাদা মেঝে হাজিদের রক্তে রঞ্জিত হয়। মসজিদের সংস্কার কাজে ব্যবহৃত ক্রেনটি মক্কার পবিত্র মসজিদুল হারামের তৃতীয় তলার মেঝেতে আছড়ে পড়লে, তার নিচে চাপা পড়ে ও হুড়োহুড়িতে পদদলিত হয়ে কয়েকশ' মুসল্লি হতাহত হন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত একটি ছবিতে বিশ্বের বৃহত্তম এই মসজিদের সংস্কারে ব্যবহৃত ক্রেনের ওপর বজ্রপাত হতে দেখা যায়। এর আগে সকাল থেকেই ভারি বৃষ্টির পাশাপাশি তীব্র ঝড়ো হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে পবিত্র নগরী মক্কা। হারাম শরিফে ক্রেন দুর্ঘটনার জন্য এই বিরূপ আবহাওয়াকেই দায়ী করছে সৌদির সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ।
তারপরও থেমে নেই সমালোচনা। একজন মুসলমান যেখানে জীবনে একবার হলেও কাবা শরীফ জেয়ারতের স্বপ্ন দেখেন, সেই স্থানে এমন দুর্ঘটনায় সমালোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। হজের মাত্র দু'সপ্তাহ আগে কাবা শরীফকে ঘিরে থাকা মক্কার বড় মসজিদে হতাহতের এ ঘটনায় এখানকার নিরাপত্তার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইসলামি ঐতিহ্য গবেষণা ফাউন্ডেশন ড. ইরফান আল আলাবি বলেন, 'গুরুত্বপূর্ণ এমন স্থাপনায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অবশ্যই কিছু কৌশল দরকার। প্রতিবছরই হজ করতে এসে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে, এমনটা কখনও কাম্য নয়।'
এই সমালোচনার মুখে দেশটির সরকার পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। এতে কারও দায়িত্বে অবহেলা আছে কি-না তাও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মক্কার গভর্নর প্রিন্স খালেদ আল ফয়সাল। তিনি এ ঘটনায় আহতদের যথাযথ চিকিৎসা ও তাদের হজ পালনে সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
মসজিদ আল-হারাম কমপ্লেক্স প্রায় ৮৮ একর এলাকা জুড়ে অবস্থিত। গত বছর মসজিদের এলাকা সম্প্রসারণ করে ৪ লাখ বর্গ মিটার করতে কাজ শুরু করে সৌদি সরকার।
সুত্রঃ সময় টিভি
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন